ইন্টারনেট (internet) আমার মতে একটা নবজাগরণ। মানবজাতির ইতিহাস যতদিন লেখা থাকবে ততদিনই ইন্টারনেটের উল্লেখ থাকবে। এই ইন্টারনেটের দৌলতে প্রতি মুহূর্তে অকল্পনীয় সমস্ত সম্ভাবনা তৈরী হচ্ছে। নতুন ভাবে বিশ্বটা সাজছে।
মানুষ ইন্টারনেটের সাহায্যে অনেক নতুন এবং উদ্ভাবনী (innovative) জিনিস করছে বা করবার চেষ্টা করছে। ভবিষ্যতে আরো করবে। শুধু ইন্টারনেটে করছে তাই নয়, ইন্টারনেটকেও বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করবার চেষ্টা করছে। মুহূর্তের ব্যবধানে সবকিছু পাল্টে যাচ্ছে। আমাদের জীবনের গতি ঘড়ির সেকেন্ডের কাঁটার সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতি মুহূর্তে দৌড়চ্ছে। আমরা এই অত্যন্ত দ্রুতগতির জীবনের সাথে অভ্যস্তও হয়ে পড়েছি।
এই গতি হল ইন্টারনেটের একটা গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। অত্যন্ত দ্রুত গতিতে যোগাযোগ স্থাপন করা যায় পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে। এই বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে আমরা আমাদের একটা আলাদা অস্তিত্ব তৈরী করেছি। একটা ইন্টারনেটের জগৎ তৈরী করেছি। সেই জগতে সমস্ত কিছুই অত্যন্ত দ্রুতগতি সম্পন্ন। চোখের নিমেষে ব্যবসা তৈরী হচ্ছে। চোখের নিমেষে টাকার আদান প্রদান হচ্ছে। আমাদের আসল জগতের আদলে তৈরী এই দ্রুতগতির জগৎ মানবজাতিকে একটা নতুন সম্প্রসারিত সীমা এঁকে দিয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে সীমাহীন করেও দিয়েছে।
কিন্তু আমি এখনো এই ইন্টারনেট জগতের প্রধান মূল্যটা সনাক্ত করে উঠতে পারিনি। ইন্টারনেট জগৎটা আসলে কি? এটা কি শুধুমাত্রই একটা অস্তিত্ব? না কি একটা নতুন দিক? না কি একটা মাত্রা?
ইন্টারনেট আমাদের জীবনে একটা নতুন মাত্রা যোগ করেছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমাদের জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ মাত্রাও বলা যেতে পারে। সময়ের দাম বেড়েছে। আমরা নতুন ভাবে বিবর্তন করবার চেষ্টা করছি। যতদিন যাবে এই ইন্টারনেটের বৈশিষ্টগুলো আরো নির্দিষ্ট হবে। আর আমরা সেই বৈশিষ্ট্যগুলোর ওপর ভিত্তি করে আরো বিবর্তিত হব।
এত সম্ভাবনার মধ্যেও ইন্টারনেটের এমন একটা দিক রয়েছে যা একে কিছুটা হলে ক্ষুণ্ণ করছে। সঠিক এবং সততা সম্পর্কে ইন্টারনেটে একটা বিশাল ব্যবধান রয়েছে।
এখানে প্রতি মুহূর্তে এত নুতুন নুতুন জিনিস হচ্ছে, কিন্তু অনায়াসে বিশ্বাস করবার প্রবণতার সাথে আমরা সব সময়ে লড়াই করে যাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করতে চাইছি কিন্তু বিশ্বাস করতে পারছিনা।
আমার মনে হয় এই শূন্যস্থান পূরণের জন্য আমাদের নিয়ন্ত্রণ আর নিয়মের প্রয়োজন। এদিকে আবার নিয়ন্ত্রণ মানে নিয়ম মেনে চলা, নিয়ম মানে কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা। এই ক্ষমতা খুব ভয়ঙ্কর।
আমি আবার স্বাধীনতা ছেড়ে দিতেও রাজি নই। আমি চাই না যে কেউ আমার জন্য আরও নিয়ম তৈরি করুক। আমার ইতিমধ্যে যথেষ্ট নিয়ম আছে।
আমি সেই নিয়মের শেকলগুলো ভেঙে সবকিছু ঘুরে দেখতে চাই।